ব্লু-টুথ কি? বৈশিষ্ট্য সুবিধা-অসুবিধা এবং ব্যাবহার (তারবিহীন মাধ্যম)
স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদানের জন্য ব্যবহৃত একটি ওপেন ওয়্যারলেস এটোকলকে ব্লু-টুথ বলে। অর্থাৎ নিম্নশক্তিসন্ত্র রেডিও - High Frequency) সঞ্চালনে ডেটা আদান-প্রদানে সক্ষম তারবিহীন স্বল্প দূরত্বে ব্যবহৃত একটি ওপেন ওয়্যারলেস প্রযুক্তিকে ব্লু-টুথ বলে। ব্লু-টুথ সমন্বিত যন্ত্রপাতি সুইচ অন করার সাথে সাথে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একে অপরের সাথে যোগাযোগ ঘটাতে সক্ষম হয়। দশম শতাব্দীর ডেনমার্কের রাজা হারাল্ড ব্লু-টুথ এর নামানুসারে এ প্রযুক্তির নামকরণ করা হয়।
ads
ইন্টেল, এরিকসন ও গ্রীকম প্রস্তাবিত ব্লু-টুথ (B) হচ্ছে এমন একটি প্রটোকল যা নিম্নশক্তিসম্পন্ন রেডিও সঞ্চালনে ডেটা পরিবহন করতে সক্ষম। দুই বা ততোধিক যন্ত্রের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে তারের ব্যবহার শুরু হয়েছে সুদীর্ঘকাল থেকেই। কিন্তু কোনো যন্ত্র যদি ভ্রাম্যমাণ ও বহনযোগ্য হয় সেক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এ সমস্যা থেকে সমাধানের জন্য ভারবিহীন যোগাযোগ পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে।
এটি 2.4 GHz ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডে কাজ করে। ব্লু-টুথ 1.2 সংস্করণে ডেটার হার। Mbps এবং 2.0 সংস্করণে 3 Mbps: ট্রুথ প্রযুক্তিতে কম ক্ষমতাবিশিষ্ট বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে তথ্য পাঠানো হয়। এ যোগাযোগ ব্যবস্থায় 245 GHz (প্রকৃতপক্ষে 2.402 থেকে 2480 GHz এর মধ্যে)-এর কম্পাঙ্ক ব্যবহৃত হয়। ব্লুটুথের স্ট্যান্ডার্ড IEEE 802.15 শিল্প, বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রের জন্য উপরিউক্ত কম্পাঙ্কের সীমাটি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ব্লু-টুথ কর্তৃক প্রেরিত সিগন্যালের ক্ষমতা থাকে মাত্র ।
মিলিওয়াট, যেখানে সেল ফোন ও ওয়াট পর্যন্ত সিগন্যাল প্রেরণ করে। অর্থাৎ ব্লু-টুথের নিম্ন ক্ষমতার সিগন্যাল উচ্চ ক্ষমতার সিগন্যালে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে না। ব্লু-টুথ একসাথে ৪টি যন্ত্রের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। তবে প্রত্যেকটি যন্ত্রকে 10 মিটার ব্যাসার্ধের একই বৃত্তের মধ্যে অবস্থিত হতে হয়। কারণ ব্লু-টুথ প্রযুক্তি চারিদিকে সর্বোচ্চ 10 মিটার পর্যন্ত ক্রিয় থাকে। তবে A যন্ত্রের সাথে B যন্ত্রের যোগাযোগের সময় কাছাকাছি অবস্থিত অপর দুটি যন্ত্র C ও D এর মধ্যে ব্লু-টুথ যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয় । - "Spread spectrum frequency hopping" পদ্ধতিতে একই সময়ে একাধিক যন্ত্র একই কম্পাঙ্ক ব্যবহার করে না। ফলে একে অপরের
যোগাযোগ ব্যবস্থাতে বাধার সৃষ্টি করে না। এ পদ্ধতিতে কোনো একটি যন্ত্র নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অবস্থিত কম্পাঙ্ক হতে 79টি পৃথক পৃথক কম্পাঙ্ক এলোমেলোভাবে গ্রহণ করে ও একের পর এক পরিবর্তন করে। ব্লু-টুম্বের ক্ষেত্রে, ট্রান্সমিটার প্রতি সেকেন্ডে 1600 বার কম্পাঙ্ক পরিবর্তন
করে। ব্লু-টুথ প্রটোকল বাস্তবায়নকারী যন্ত্রাংশ বা ডিভাইসগুলো দ্বিমুখী সংযোগ স্থাপন করে কাজ করে। ব্লু-টুথ প্রযুক্তিনা সাহায্যে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তার মৌলিক উপাদান হলো পিকোনেট (Pleonet)। বর্তমানে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, গেমিং কনসোল, ডিজিটাল ক্যামেরা, প্রিন্টার, ল্যাপটপ, জিপিএস রিসিভার যন্ত্রে ব্লু-টুথ প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। এ প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। বহুল ব্যবহৃত ব্লু-টুথ ক্লাস 2 রেডিয়াস 2.5 মিলিওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। বেশি সময় ব্লু টুথ চালু রাখলে দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়। এ জন্য কাজ শেষে ব্লু-টুথ অফ করে রাখতে হয়।
ব্লু-টুথ এর বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Bluetooth)
- পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (PAN) স্বল্প দূরত্বে (১-১০ মিটারের) দুটি ডিভাইসের মধ্যে ডেটা স্থানান্তরে ব্লু-টুপ রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করে। দিনদিন এর পরিধি বা বিস্তৃতি বাড়ছে। বর্তমানে যার পরিধি ১০-১০০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত।
- ডেটা ট্রান্সমিশন রেট ১ থেকে ২ এমবিপিএস। ব্লু-টুথ ২.৪ গিগাহার্টজ (GH) ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে।
- ব্লু-টুথ একটি পিকো-নেট এর আওতায় সর্বোচ্চ ৮টি যন্ত্রের সাথে সিগন্যাল আদান-প্রদান করতে পারে।
- মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, প্রিন্টার, ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ভিডিও গেম কনসোলগুলোকে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত করতে এবং তথ্য বিনিময় করতে ব্লু-টুথ নিরাপদ উপায়ে তথ্য সরবরাহ করে থাকে।
- ব্লু-টুথ ব্যবহারকারীর মধ্যস্থতা ছাড়াই অটো কনফিগার করতে পারে।
ব্লু-টুং এর সুবিধা :
- এটি PAN এর ওয়্যারলেস ভিডিও নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা WPAN।
- স্বল্প দূরত্বে ব্যবহৃত ওয়্যারলেস প্রটোকল।
- এর ফ্রিকোয়েন্স ব্যান্ড 2.45 GHz।
- এর কোন কনফিগারেশন করতে হয় না।।
- সর্বোচ্চ 10 মিটারের ব্যাসার্ধের মধ্যে কাজ করে।
ব্লু-টুথ এর অসুবিধা :
- ডেটা সিগন্যালের ক্ষমতা মাত্র। মিলিওয়াট।
- ব্যান্ড উইপত্র তুলনামূলক কম।
- ডেটা এলফারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল।
Comments
Post a Comment